আজ ১২ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৫শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

বৃষ্টি হওয়ায় আমন রোপণে ব্যস্ত বোয়ালখালীর কৃষকরা


বোয়ালখালী প্রতিনিধি

বৃষ্টি হওয়ায় মৌসুমের শুরুতেই আমনের চারা রোপণে বিরামহীন কর্মযজ্ঞে মাঠে সময় পার করছেন চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার প্রান্তিক কৃষকরা। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে জমিতে পানি জমে ধানের চারা রোপণের উপযোগী হওয়ায় ব্যস্ততা বেড়েছে তাদের। সময় মতো চারা রোপণ করতে না পারলে ভালো ফলন পাওয়া যাবেনা বলে জানান কৃষকেরা।

রোববার (২৮ জুলাই) বিকেলে পৌরসভাসহ উপজেলার শ্রীপুর খরণদ্বীপ, আমুচিয়া, করলডেঙ্গা, সারোয়াতলি, পোপাদিয়া, কধুরখীল ও চরণদ্বীপ ইউনিয়নসহ বিভিন্ন জায়গায় এলাকাভেদে উঁচু, মাঝারি উঁচু, মাঝারি নীচু ও নিচু চার ধরনের জমিতে আমন ধানের চাষ হয়ে থাকে।

এ বছর সময়োপযোগী বৃষ্টি হওয়ায় মৌসুমের শুরুতেই উঁচু, মাঝারি উঁচু, জমিতে আমন আবাদ পুরোদমে শুরু হয়ে গেছে বলে জানান জৈষ্টপুরা গ্রামের কৃষক মো. আবদুল নবী। তিনি বলেন, জৈষ্টপুরা ব্রাহ্মণ্য বিলে এবার এক একর ৬০ শতক নিজস্ব জমিতে পাঞ্জা ও কাটারি ধানের চাষ করবেন তিনি। এতে সার, মজুরি ও ট্রাক্টর খরচসহ ব্যয় হবে ৬০ হাজার টাকা। ফলন ভালো হলে ২৪০ আড়ি ধান পাওয়া যাবে। সবকিছুর দাম বেড়ে যাওয়ায় চাষাবাদে আগের মতো তেমন লাভ নাই বলে জানান তিনি।

শ্রীপুর দক্ষিণ বিলের কৃষক মো. নেজাম উদ্দিন বলেন, তিন একর জমিতে কাটারি এবং ৪৯ জাতের ধান রোপণ করছেন তিনি। প্রতি একর জমিতে চাষ দিতে ট্রাক্টর খরচ ৫ হাজার টাকা দিতে হয়। এছাড়া ১ জন শ্রমিকের দৈনিক মজুরি ৮০০ টাকা, তিনজন শ্রমিক কাজ করছেন,এতে অনেক টাকা খরচ হবে। বৃষ্টি না হলে উঁচু জমিতে সেচ দিয়ে চারা রোপণ করতে হতো, এতে আরো খরচ বেড়ে যায়।

৪০ বছর ধরে চাষাবাদ করে যাচ্ছেন উপজেলার জৈষ্টপুরা গ্রামের কৃষক কাজল চক্রবর্তী। তিনি বলেন, কৃষকদের জন্য সরকার প্রণোদনাসহ নানান সুযোগ সুবিধা দিচ্ছে। এ পর্যন্ত সরকারি সহযোগিতা বাবদ কোনদিন একমুঠ সারও পায়নি বলে জানান তিনি। ধারদেনা করে এবারও নিজস্ব ও বর্গা মিলিয়ে ৫ কানি জমিতে আমন আবাদ করছেন তিনি। ফলন ভালো হলে ধারদেনা পুষিয়ে কোনরকমে চলতে হবে।

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো আতিক উল্লাহ বলেন, বোয়ালখালীতে চলতি মৌসুমে আমনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে। আবাদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে উপজেলার প্রান্তিক কৃষকদের সরকারি প্রণোদনা হিসেবে ৭০০ জন চাষিদের জনপ্রতি ৫ কেজি বীজ ১০ কেজি ডি পি ও ১০ কেজি এমওপি সার দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কৃষকদের অধিক ফলনশীল আগামজাত স্বল্প জীবনকাল সমৃদ্ধ উন্নতজাতের বীজ যেমন- ব্রি-ধান ৪৭ ব্রি-ধান ৯৫ ব্রি-ধান ৪৯ চাষে উদ্বুদ্ধকরণ এবং লাইন লগো, একচারা ও পার্চিং পদ্ধতিতে ধানের চারা রোপণের প্রযুক্তিগত বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর